বান্দরবানের লামা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক
নূর মোহাম্মদের হুমকি দেওয়ার একটি অডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।দেশের একজন প্রথম শ্রেণির নগরিক ও চিকিৎসক হয়ে এরুপ সন্ত্রাসী কায়দায় হুমকি প্রদানের কথা-বার্তা শুনে বিষ্ময় প্রকাশ করেছেন অনেকেই।
অডিওটিতে লামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জুনিয়র কনসালটেন্ট নুর মোহাম্মদ,
ম্যাক্স হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটর ইনচার্জ শাহীনকে বলতে শোনা যায়, শাহীন তুমি কেমন আছ?আজকে অ্যানাস্তেসিয়া করার জন্য কোন প্লেয়ার মাঠে আছে কিনা? জায়গার মালিক কি দেড় লাখ টাকা দিতে রাজি হয়েছে?
অপর দিক থেকে শহীনকে বলতে শুনা যায়, উনি ২ লাখ ২৫ হাজার টাকা চায়।
নূর মোহাম্মদ বলেন,
তাহলে কক্সবাজারে একটি পেয়েছি সেটি নিয়ে নিচ্ছি।আমার ড্রাইভার ভালো ছেলে । সে খবর এনেছে।
শোভন কি আছে নাকি চলে গেছে?
শাহীন: চলেগেছে।
ডাক্তার নূর মোহাম্মদ: আমি চকরিয়াতে আছি।
শোভন দত্তের দিনে শোভন দত্ত না থাকলে আমার রাস্থা খোলা।যেদিন যার দ্বায়িত্ব ভাগ করা সে দিন তাকে সরিয়ে আমাকে ডাকার দরকার নেই।
এটা হচ্ছে আমার নৈতিকতা।আমার দিনে যদি আমাকে না ডেকে অন্য কাউকে ডাকেন তাহলে কোন সময় কার গায়ে হাত তুলবো তার কোন গ্রামার নেই, বলে দিবেন।হাত তুল্লে মাজেদদের মত হাত তুলবোনা হাত ভেঙে ওর পাছা দিয়ে ভরে দেব। একথা গুলো শোনানোর জন্য বলছি না। রেকর্ড করেন।ওকে বলে দিবেন। সার্জন কিংবা অ্যানাস্তেসিষ্ট যে মা পুয়া অইব অগ, যে আত্ দি অ্যানাস্তেসিয়া গরিব এই আতর আড্ডি ভাঙি ইতার ইনদ্দি ভরি দিব (সার্জন কিংবা অ্যানাস্তেসিষ্ট যে মায়ের ছেলে অ্যানাস্তেসিয়া করবে, তার সে হাতের হাঁড় ভেঙ্গে তার পায়ু পথে ঢুকাই দিবে)।
আপনি অফিসিয়ালি হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটরের ইনচার্জ হওয়ায় আপনাকে বিষয়টি আফিসিয়ালি জানাচ্ছি। হাসপাতালের সার্জন ও অ্যানাস্তেসিষ্টদের বলে দিবেন যেদিন নুর মোহাম্মদ স্যারের দিন, সে দিন উনাকে না জানিয়ে কেউ অ্যানেস্থিসিয়া করলে নুর মোহাম্মদ স্যার এসে পিটাইয়া হাতের হাঁড্ডি ভেঙে পাছায় ঢুকাই দিবে।আমি কিন্তু এই কথা রেকর্ড করছি,আপনি এই কথা রেকর্ড করে তাদের শোনাই দিবেন।আজ শোভনের দিন আগে শোভনকে দিবেন যদি না আসে তাহলে আমাকে ফোন দিবেন।আমি চাকরির খাতিরে আসেপাশে আছি।
সপ্তাহের শুক্র ও শনিবার তার দিনে অন্য কোন সার্জন বা অ্যানাস্তেসিস্ট ওটি বা অপারেশন করলে তারদের হাত ভেঙে তাদের পায়ু পথে ডুকিয়ে দেয়া হবে।যাথে জীবনের তরে ওটি করার সখ মিঠে যায়। আগে মাজেদ স্যারের ঘটনায় মাজেদ স্যার চর, লাথি দিয়ে ছেড়ে দিয়েছিল।তিনি মাজেদ স্যার নয়।তিনি নূর মোহাম্মদ, পিটিয়ে হাত ভেঙে পায়ু পথে ঢুকিয়ে দিবেন।এবং এই বার্তাটি যেন তাদের পৌঁছে দেয়া হয়।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে নূর মোহাম্মদ জানান, ম্যাক্স হাসপাতাটিতে তিনিসহ মোট ৫ জন অংশিদার।তাদের ১ কোটি ৭০ লাখ ভাগের টাকা আত্নসাথ করেন ওই সিন্ডিকেটে অপর একজন শেয়ার হোল্ডার।তাকে উদ্দেশ্য করে এই কথা বলেছেন বলে দাবি করছেন তিনি। মিঠিংয়ে আছেন বলে ফোন কেটে দেন তিনি।পরে একাধিক বার ফোন করলেও ফোন রিসিভ করেননি তিনি।
একজন চিকিৎসক সরকারী চাকুরি করাকালীন সময়ে অন্য বেসরকারি হাসপতালের অংশিদার বা চিকিৎসা সেবা দিতে পারেন কিনা জানতে চাইলে বান্দরবানের ডেপুটি সিভিল সার্জন ডাক্তার দীলিপ কুমার দেবনাথ বলেন, এরুপ হওয়ার কথা নয়।তবুও বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য, গত ১০ মার্চ জুনিয়র কনসালটেন্ট ডাক্তার নুর মোহাম্মদের দায়িত্ব পালন কালে লামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ব্যানারে শেখ হাসিনার ছবি রেখে ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইনের সভা করায় এলাকায় বেশ সমালোচনার সৃষ্টি হয়।ওইদিন সন্ধ্যায় চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি যোগদানের আদেশ পাওয়া ডাক্তার শোভন দত্তকে ক্ষমতা হস্থান্তর করেন জুনিয়র কনসালটেন্ট ডাক্তার নুর মোহাম্মদ।আবার ক্ষমতা হস্তান্তরের পক্রিয়া চলা কালে পক্রিয়াটি বাঞ্চালের চেষ্টায় মব তৈরি করতে পার্শ্ববর্তী চকরিয়া উপজেলা থেকে ২ হাজার টাকার বিনিময়ে শোভন দত্তের বিরোধী ব্যানার ও লোকজনকে ভাড়া করেন তিনি। পরে স্থানীয়রা ভাড়াটে তিন জনকে আটক করে পুলিশে হস্থান্তর করে।যার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক ভাইরাল হয়।