মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলমান সংঘাতকে কেন্দ্র করে প্রতিদিনই বাড়ছে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা দেশটির সেনা ও সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপি সদস্যের সংখ্যা।
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি ও টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশ করে আজ (১৮ এপ্রিল) বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ২৬১ জন সেদেশের সেনা ও বিজিপির সদস্যদের রাখা হয়েছে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি ১১ বিজিবি আওতাধীন বর্ডার গার্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।
এ অবস্থায় উৎকণ্ঠায় দিন পার করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বলছেন, তাদের আশ্রয় দিতে গিয়ে তৈরি হচ্ছে নানামুখী সমস্যা।
বাংলাদেশে ঢুকে পড়া মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে দুঃচিন্তায় স্থানীয়রা, আছে নিরাপত্তা শঙ্কাও।
এদিকে চলতি মাসের (২১ এপ্রিল) দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলবে। তাই এর মধ্যে আশ্রিত মিয়ানমারের সেনা ও বিজিপির সদস্যদের সেদেশে ফেরত না পাঠালে ৪৭৫ জন শিক্ষার্থীদের পাঠদান অনিশ্চিত হয়ে পড়বে বলে জানান অবিভাবকরা।
বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে যেমন রয়েছে স্থলপথ, ঠিক তেমনি আছে নদী ও সাগরপথ। প্রতিদিনই সীমান্তের ওপারে কোনো না কোনো ঘাঁটি দখল নিতে হচ্ছে। চলছে গোলার বিস্ফোরণ, তীব্র গুলি বিনিময়, মটারশেল নিক্ষেপ। তবে এখন বিজিপি ও আরাকান আর্মির মধ্যকার লড়াই জোরালো হয়েছে নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়নের আশারতলী, জামছড়ি সীমান্তের বিপরীতে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে।
আরাকান আর্মির সঙ্গে লড়াইয়ে না পেরে পালিয়ে বাংলাদেশে ঢুকে পড়ছে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপিসহ সেদেশের সেনা সদস্যরা। অন্যদিকে গুলি, গোলার বিস্ফোরণ ও বিজিপি সদস্যদের বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের ঘটনায় আতঙ্কে নাইক্ষ্যংছড়ির আসারতলী, সাপমরা ঝিরিসহ জামছড়ি সীমান্তে বসবাসরত স্থানীয় বাসিন্দারা।
গেলো দেড়মাসে নাইক্ষ্যংছড়ি এবং টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে কয়েক দফায় পালিয়ে বাংলাদেশে ঢুকেছেন মিয়ানমারের সেনা ও সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপির ২৬১ জন সদস্য। যাদেরকে বিজিবি হেফাজতে নিয়ে আশ্রয় দিয়েছে নাইক্ষ্যংছড়ি ১১ বিজিবি জোনের বর্ডার গার্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। এ অবস্থায় স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, পালিয়ে আসা মিয়ানমারের সেনা ও বিজিপি সদস্যদের আশ্রয় দিতে গিয়ে পড়তে হচ্ছে তাদেরনানামুখী সমস্যায়।
নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. নুরুল আবছারের বলেন, মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসাদের দ্রুত স্বদেশে ফেরত পাঠালে এলাকার ভীতিকর পরিস্থিতি কেটে যাবে।
মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সংঘর্ষের কারণে সীমান্তের টহল বাড়ানোর পাশাপাশি সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি।
এ বিষয়ে মঙ্গলবার বিকেলে বিজিবির এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, কোনো প্রকার জটিলতা সৃষ্টি না হলে চলতি এপ্রিলেই মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা জান্তা সদস্যদের তাঁদের দেশ মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হতে পারে ২৬১ জনের মধ্যে বিজিপির ছাড়াও সেনা সদস্য রয়েছেন। তবে কোন বাহিনীর কত জন সদস্য তা এখন বলা যাচ্ছে না।
বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শাহ্ মোজাহিদ উদ্দিন বলেন, এবিষয়ে আলোচনা চলছে, চেস্টা চালিয়ে যাচ্ছি আমরা। যেহেতু বিদ্যালয়টি বিজিবির অধীন সেহেতু তারা অবশ্যই পদক্ষেপ নিবে যাতে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার সমস্যা না হয়।