শনিবার- ১৯শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

dainiknilgiri.com
প্রচ্ছদ /

অভয়ারণ্য থেকে ছুটে আসা বন্য হরিণ জবাই করে মাংস ভাগবাটোয়ারা

চট্টগ্রাম দক্ষিন বনবিভাগের চুনতি রেন্জের হারবাং অভয়ারণ্য বিটের আওতাধীন কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার হারবাংয়ে একটি বন্য হরিণ শিকার ও জবাই করে মাংস ভাগবাটোয়ারা ঘটনা ঘটেছে।

৪ এপ্রিল ( শুক্রবার) সকাল ৯টার দিকে চট্টগ্রাম- কক্সবাজার মহাসড়কের লালব্রীজের পশ্চিম পার্শ্বে হোসেন মেস্ত্রীর দোকানের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

হরিণটি ওই সময় পূর্ব বৃন্দাবনখীল অভয়ারন্যের গহীন পাহাড় থেকে বনদস্যুরা তাড়া করলে লোকালয়ে চলে আসে।

জানাগেছে স্থানীয় ফার্নিচার মেস্ত্রী মোঃ হোসেন কাঠের বাটাম দিয়ে ধাওয়া করলে হরিণটি দৌঁড়ে পার্শ্বের বিপ্লব শীল নামক এক ব্যক্তির সেলুনের দোকানে ঢুকে পড়ে। এসময় তারা সেলুনের সাঁটার টেনে দিয়ে হরিণটিকে ধরে ফেলে। এরপর দোকানের সামনে স্লুইস গেইটের পানির ড্রেনে নিয়ে গিয়ে হরিণটি জবাই করে দেন। পর প্বার্শবর্তী সনজিতের আমলকি গাছের নিচে চামড়া ছাটাই করার সময় স্থানীয় লোকজন জড়ো হলে হোসেন মেস্ত্রী হরিণটি মোটর সাইকেল যোগে বড়ুয়া পাড়া দিকে নিয়ে যায় বলে নিশ্চিত করেছেন সেলুন মালিক বিপ্লব শীল।
খবর পেয়ে চুনতি বন্যপ্রাণী অভয়ারন্য রেন্জ কর্মকর্তা গাজী বাহার উদ্দীন, হারবাং অভয়ারণ্য বনবিট কর্মকর্তা কবির আহামদ সহ বনরক্ষীরা ঘটনার স্হান পরিদর্শন করে আলামত সংগ্রহ করেন।এবং ঘটনায় জড়িতদের বিষয়ে স্হানীয় একাধিক ব্যক্তির সাথে আলাপ করেন।

জবাইকৃত হরিণটির মোট ওজন ছিলো ১৮ কেজি ৬০০গ্রাম। এসময় আলামত হিসেবে স্লুইসের পানির ড্রেন ও সনজিতের আঙ্গিনার যে স্থানে হরিণটিকে জবাই করা হয়েছিলো সেখান থেকে রক্তমাখা মাটি ও হরিণ জবাইয়ে ব্যবহৃত সরঞ্জাম উদ্ধার করে নিয়ে যায় বলে জানান স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায় যে, হরিণটি স্থানীয় হোসেন মেস্ত্রী, শওকত, নেজাম উদ্দিন, শাহিনা আক্তার, শহিদুল ইসলাম(মনুমিস্ত্রী) দ্বারা জবাই করা হয় এবং মাংস ভাগবাটোয়ারা করা হয়।

অভিযুক্ত ব্যক্তি মধ্যে বিপ্লবের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, হরিণটি প্রাণ রক্ষার জন্য সেলুনে ঢুকে পড়েছিল এবং হোসেন মেস্ত্রী ধরে ফেলে। তারপর সেগুলো সুইচের ড্রেনের পাশে নিয়ে গিয়ে হরিণটি জবাই করেন এবং মাংস ভাগবাটোয়ারা করতে হোসেনের মোটরসাইকেলে তোলে নিয়ে যায় ।

স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী লালব্রীজের চায়ের দোকানদার সাইফুল ইসলাম বলেন, সনজিতের বাড়ির আঙ্গিনায় হরিণটি জবাই করা হয়েছিল আমি জবেহ করা অবস্থায় দেখেছি ।
এ ঘটনায় জড়িতদের সনাক্ত করে আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা নিতে এরই মধ্যে বন্যপ্রাণী ব্যবস্হাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষন বিভাগ চট্টগ্রাম বন্য প্রাণী সংরক্ষণ বিভাগ চট্টগ্রাম দক্ষিনের সহকারি বন সংরক্ষক নুর জাহান বেগমের নেত্বৃত্বে বনবিভাগের একটি তদন্ত দল মাঠে কাজ করছেন বলে জানান হারবাং বিট কর্মকর্তা কবির আহমদ। ঘটনার পর পর অপরাধীরা গাঁ ডাকা দিলেও নিরপরাধ সাধারণ মানুষ মামলা আতংকে ভুগছেন বলে জানান এলাকাবাসী।

এ ঘটনায় স্থানীয়রা তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন কিছু বনদস্যুরা বিভিন্ন মাধ্যমে প্রকৃত অপরাধীদের আড়াল করে নিরপরাধ কিংবা ঘটনা সম্পর্কে অবগত নয় এমন কিছু ব্যক্তিদের সম্পৃক্ত করার পায়তারা চলছে। সঠিক তদন্তের মাধ্যমে জড়িতদের বিরুদ্ধে বনবিভাগ দৃষ্টান্তমুলক ব্যবস্হা নেবেন
এমনটাই দাবি জানিয়েছেন তারা।

0Shares

আরও পড়ুন

সম্পর্কিত আরো খবর

জনপ্রিয়