কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার উপকূলীয় মশালীয়াঘোনা ও দক্ষিণ সওদাগরঘোনা এলাকার দুই হাজার পরিবারের সদস্যদের মালিকানাধীন ১হাজার ৩৭ একর চিংড়ি ও লবণ মাঠ ভূমিদস্যুদের কবল থেকে উদ্ধারে এক মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করছে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা।
গতকাল ১০ জানুয়ারী জুমার নামাজের পর মশালীয়াঘোনা এলাকায় এ মানববন্ধনের আয়োজন করেন তারা। আয়োজিত এ মানববন্ধনে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা অভিযোগের সুরে বলেন, ১৯১১-১২ সালে পাট্টা দলিল মূলে ১৮ জনের নামে পালাকাটা মৌজার মশালীয়া ঘোনা এলাকায় ১০৩৭ একর ভুমির মালিক তাদের বাপ- দাদা।
বংশ পরম্পরায় ওইসব জায়গার মালিক এখন ২ হাজার সদস্য। জানা গেছে, স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ সরকার যখন পূনরায় উক্ত জায়গার জমি লিজ প্রদান করে তখন তারা উক্ত জায়গা নিজেদের দাবি ও পূণলিজের জন্য আবেদন করেন। এ আবেদনের ধারাবাহিকতায় কক্সবাজার জেলা প্রশাসক থেকে ১৯৯১-৯২ সালে উক্ত জমি তারা লিজপ্রাপ্ত হয়। এ জমি তারা সম্মিলিত ভাবে চাষাবাদ করার নিমিত্তে মশালীয়া ঘোনা ও দক্ষিণ সওদাগর ঘোনা কৃষি উপনিবেশ সমবায় সমিতি গঠনের মাধ্যমে জমিগুলো লাগিয়ত ও চাষাবাদ নিশ্চিত করে প্রতি সনে সনে সরকারি রাজস্বের পাশাপাশি সরকারের নীতিমালা অনুযায়ী চাষাবাদ করে প্রায় ২হাজার পরিবার জীবন-জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন।
ক্ষমতার অপব্যবহার করে আওয়ামী লীগের দোসর সাবেক এমপি জাফর আলমের নেতৃত্বে স্থানীয় চেয়ারম্যান জামাল চৌধুরী ও তার শতাধিক বাহিনী গত ১৫ বছর ধরে দখল করে নেয়। এতে তাদের ভুমি বে-দখল হয়ে পড়ে। এসব জমি দখল নিতে গিয়ে সন্ত্রাসীদের হাতে বিভিন্ন সময় নারী পুরুষ অনেকেই আহত হয় এবং তাদের অনেককে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে দিয়ে হয়রানির শিকার করে ঘরছাড়া করেন।
আয়োজিত এ মানববন্ধনে তারা আরো বলেন, জাফর বাহিনীর সদস্য জহুর আহমদ, আবুল কালাম, আনোয়ার হোসেন, নাজেম উদ্দিন, মো. রকি ও মোহাম্মদ মমতাজের নেতৃত্বে শতাধিক বাহিনী নিয়ে উক্ত চিংড়ি ঘেরের জমি গুলো দখল অব্যাহত রাখে।
তারা এসব সশস্ত্র দখলবাজ চক্র থেকে তাদের পৈত্রিক ও লিজপ্রাপ্ত জমি ফিরে পাওয়ার জন্য মাননীয় প্রধান উপদেষ্টাসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
গতকাল দুপুরে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, সমিতির সাবেক সভাপতি এমএ রশিদ, বর্তমান সভাপতি সরওয়ার আলম, সহসভাপতি দিদারুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ খিজির সহ জমির মালিকগন।
এসময় ভুক্তভোগী পরিবার তাদের জমি উদ্ধারের জন্য প্রশাসনসহ সবার সহযোগিতা কামনা করেন। এদিকে, এ মানববন্ধন শেষে চিরিংগা শহরে আসার পথে সন্ত্রাসী ইব্রাহিমের নেতৃত্বে সমিতির সহসভাপতি মো. দিদারুল ইসলামের উপর হামলা চালানো হয়। পরে তাকে উদ্ধার করে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে চিকিৎসা প্রদান করা হয়। এ ব্যাপারে মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানা গেছে।