এক সপ্তার মাথায় আবারো মাঠে নেমেছে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি মদিনাতুল উলুম মডেল ইনস্টিটিউট ডিগ্রী মাদরাসার শিক্ষার্থীরা। অধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবীতে এক সপ্তাহ ধরে আন্দোলন চালিয়ে আসছে তারা। তবে এখনো প্রশাসনিক কোন সুরাহা হয়নি। আন্দোলনে নেমে শিক্ষার্থীরা আহত হয়েছে। কিন্তু অধ্যক্ষ ছুটি নিয়ে শহরে অবস্থান করছে।
এদিকে নানা অনিয়ম, দুর্নীতির অভিযোগ এনে অধ্যক্ষের পদত্যাগ চেয়েছেন মাদরাসার ২২শিক্ষক-কর্মচারী। সবমিলিয়ে একজন অধ্যক্ষের জন্য কয়েক শতাধিক শিক্ষার্থী ও শিক্ষক মহলে চরম অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে আরো বড় ধরনের সংঘাতের সম্ভাবনার কথা বলছেন ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী ও স্থানীয়রা।
এই বিষয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ইউএনওকে শিক্ষার্থীরা আল্টিমেটাম দিয়েছিল। কিন্তু এখনো তাদের দাবী দাওয়া পূরণ করেনি প্রশাসন। তাদের অভিযোগ, অধ্যক্ষ দীর্ঘদিন ধরে স্বৈরাচারি কায়দায় মাদরাসার শিক্ষকদের হেনস্থা এবং গ্রæপিং তৈরী করেছেন, শিক্ষার্থীদের নির্যাতন, ছাত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক করেছে, পরে চাপের মুখে বিয়ে করে ওই ছাত্রীকে।
এছাড়া নিজ আত্মীয় স্বজনকে ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে মাদরাসায় নিয়োগ দিয়েছে। এদিকে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে মাদরাসা থেকে কয়েক শতাধিক ছাত্র-ছাত্রী মিছিল সহকারে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে শ্লোগান দেন। পরে আরেকটি পক্ষ সড়কে অবস্থান নিয়ে যানচলাচল বন্ধ করে দেন।
পরিস্থিতি সামাল দিতে তাৎক্ষনিক উপজেলা নির্বাহী অফিসার ওই প্রতিষ্টানের শিক্ষক, ছাত্রপ্রতিনিধি, পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠকে বসেন। এসময় মাদরাসার সিনিয়র শিক্ষক তাজিম উদ্দিন, জাকারিয়া, ছৈয়দুল বাশার, মাওলানা আবু বক্কর ছিদ্দিক, মোক্তার আহমদ, মো: ইছহাক, রোখসানা আক্তার , ইজ্জত আলী, গিয়াস উদ্দিন, সাখাওয়াত হোসেন প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।
এই সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাকারিয়া বলেন, মাদরাসার সভাপতি সিদ্বান্ত নিয়েছেন ৪ সেপ্টেম্বর মাদরাসা গর্ভনিং বডির সদস্য, শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে আলোচনায় বসবেন। উক্ত আলোচনায় সুষ্ঠ একটি সমাধান আশা করছি আমরা সকলে। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার আশ্বাসে প্রায় ৩ ঘন্টা পর ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষকরা উপজেলা চত্বর ত্যাগ করেন।
উল্লেখ্য যে, গত মঙ্গলবার নাইক্ষ্যংছড়ি মদিনাতুল উলুম মডেল ইনস্টিটিউট আলিম (ডিগ্রী) মাদরাসার অধ্যক্ষ ছৈয়দ হোসেনের পদত্যাগের দাবীতে ছাত্র-ছাত্রীরা আন্দোলন করে। ওই দিন উপজেলা নির্বাহী অফিসার অশান্ত পরিবেশ নিরসনের স্বার্থে মাদরাসার ছাত্র-ছাত্রী, প্রশাসন এবং রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দদের নিয়ে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করা হয়। ওই দিন থেকে ছুটিতে যান অধ্যক্ষ মাওলানা ছৈয়দ হোসাইন।
অভিভাবকরা জানান, অধ্যক্ষ ছৈয়দ হোসাইন একজন দূরন্ত চালাক মানুষ! নিজের চেয়ার রক্ষার জন্য বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। ক্ষমতার জন্য ২ সেপ্টেম্বর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, শিক্ষা অফিসার ও কৃষি অফিসারের বিরুদ্ধে বান্দরবান জেলা দায়রা জজ আদালতে একটি অভিযোগ দাখিল করেছেন।