দেশের প্রচলিত আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে নিজ ক্ষমতার বলে বান্দরবান বাজার ফান্ডের অধীনে ‘বান্দরবান বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেড’ নামের এক সমবায় সমিতির দুটি প্লট খাস করে পরে অবৈধভাবে কোন নিয়ম না মেনে রাতারাতি এই প্লট দুটি লীজ দিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বান্দরবান জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লা এবং সাবেক মূখ্য নির্বাহী আব্দুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে। প্লট দুটি লীজ দেওয়া হয় অরুপ কুমার দাশ আর নেলী দাশ নামের বান্দরবানের এক ব্যবসায়ী দম্পত্তিকে।
সমবায় সমিতির সদস্যরা জানায়, প্লট দখল এবং বিক্রয় প্রক্রিয়ার কোন নিয়মই মানা হয়নি।
নাম গোপন রাখা শর্তে সমিতির বেশ কিছু সদস্যরা জানায়, যেখানে বাজার ফান্ডের যে কোন প্লট রেজিষ্ট্রি হতে সময় লাগে মিনিমাম তিন মাস সেখানে রাতারাতি কিভাবে প্লটগুলো খাস দেখিয়ে আবার নতৃনভাবে লীজে দেওয়া হলো মাথায় আসেনা।
ক্য শৈ হ্লা প্রথমত জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান দ্বিতীয়ত বান্দরবান ৩০০ নং আসনের সাবেক সাংসদ বীর বাহাদুর উশৈশিং এর শালা হওয়ার কোন অভিযোগ তো দুরের কথা, মুখ খোলারও সাহস পায়নি সমবায় সমিতির কোন সদস্য।
জানা যায়, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লা নিজ ক্ষমতার অপব্যবহার করে ১৪ বছরের খাজনা বকেয়া দেখিয়ে খাস করা হয় প্লটগুলো এবং মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে রাতারাতি লীজ দেয়া হয় অরুপ কুমার দাশ আর নেলী দাশকে।
অথচ বান্দরবান জেলা পরিষদের অধীনে থাকা বাজার ফান্ডের শত শত প্লট ৩০/৪০ বছরেরও খাজনা বকেয়া রাখার অসংখ্য নজির রয়েছে। কিন্তু এগুলোর কোন মাথা ব্যাথা ছিলনা চেয়ারম্যান আর সাবেক মূখ্য নির্বাহীর। মুলতঃ সমবায় সমিতি ধ্বংস করার পায়তারায় নেমেছে বলে জানাই সমবায় সমিতির সদস্যরা।
সমবায় সমিতির সভাপতি চহ্লাপ্রু জিমি জানায়, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লা ও মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন মিলে মোটা অংকের টাকার মাধ্যেমে আমাদের সমিতির প্লট দুটি অবৈধভাবে লীজে দিয়ে দেয়। আমাদেরকে একটা নোটিশ পর্যন্ত দেওয়া হয়নি।
তিনি আরো বলেন, এটা নিয়ে আমরা আইনি পদক্ষেপে নিতে চাই কিন্তু তারা প্লটগুলো কার নামে করেছে বা কিভাবে করেছে সে তথ্য বা কোন ডকুমেন্ট পর্যন্ত আমাদেরকে দিচ্ছে না। জানা যায়, এই সমবায় সমিতিতে প্রায় ৬শ জনের মতো সদস্য ছিল।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে একজন বলেন, প্রথমে প্লট দখল করে রেজিষ্ট্রির জন্য ক্রেতার কাছ থেকে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লা নেয় ৫০ লক্ষ টাকা। পরে রেজিষ্ট্রি কাগজে স্বাক্ষর করার জন্য ক্রেতা থেকে আবারও ১৫ লক্ষ টাকা নেয় তৎকালীন মূখ্য নির্বাহী আব্দুল্লাহ আল মামুন। তবে সাবেক মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন এবং ক্রেতা অরুপ কুমার দাশ বিষয়গুলো অস্বীকার করেছেন। সাবেক মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, আপনি বাজার চৌধুরী আর চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলেন।
সমিতির প্লট ক্রেতা অরুপ কুমার দাস ও নেলী দাস সম্পর্কে স্বামী স্ত্রী। অরুপ কুমার দাস বলেন, আমরা কোন অনিয়ম করিনি। আমাদেরকে জেলা পরিষদ লীজে দিয়েছে তাই নিয়েছি। আমার শুধু ৩/৪ লক্ষ টাকার মতো জমির খাজনা ছাড়া কোন টাকা পরিশোধ করতে হয়নি।
এ ব্যাপারে বান্দরবান জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লার বক্তব্যের জন্য সরাসরি দুই বার অফিসে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি। ফোনেও অসংখ্যবার কল করা হয়। কিন্তু রিসিভ হয়নি। পরে ক্ষুদে বার্তাও পাঠানো হয় হোয়াটসএ্যাপ এবং ম্যাসেজে। কিন্তু তারপরও কোন সাড়া পাওয়া যায়নি।