আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ ষড়যন্ত্র অব্যাহত রয়েছে মন্তব্য করে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, কথিত স্বৈরাচারের দোসররা অভ্যন্তরীণভাবে হস্তক্ষেপের চিন্তা করছে। হুঁশিয়ার করে দিতে চাই, শেখ হাসিনা যদি দিল্লিতে বসে ষড়যন্ত্র করে, তাকে ওখান থেকে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে এসে বিচার করা হবে। আন্তর্জাতিক আদালতে বিচার হবে। তিনি বলেন, দেশের জনগণ কাউকে পরোয়া করে না। প্রত্যেকটি কাজের হিসাব নেওয়া হবে।
শহীদের রক্তের ফোঁটা বৃথা যাবে না। দীর্ঘ প্রতীক্ষার এক দশক পর বুধবার (২৮ আগস্ট) কক্সবাজারে ফেরা উপলক্ষে ঈদগাঁও, চকরিয়া ও পেকুয়ায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সালাউদ্দিন আহমেদ এসব কথা বলেন। বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘যারা দেশের জনগণের ওপর গুলি চালিয়েছে, নির্বিঘেœ গণগত্যা চালিয়েছে, তাদের প্রত্যেককে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হবে। তবে, সবার কাছে আহ্বান, আপনারা কেউ আইন হাতে তুলে নেবেন না। যারা আন্যায় করেছে তাদের আইনের কাছে সোপর্দ করুন, বিচার হবে।’ বিচার বিভাগসহ প্রশাসনের সব স্তরে প্রয়োজনীয় সংস্কার করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘যেদিন গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জনগণের ভোটে সরকার গঠিত হবে, সেদিন আমাদের প্রাথমিক বিজয় হবে।
আমরা দেশে মানবিক মর্যাদার ভিত্তিতে প্রকৃত বৈষম্যহীন আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করবো। জনগণের অধিকার সমুন্নত রাখাই আমাদের মূল লক্ষ্য।’ সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘মুক্ত স্বাধীন বাংলাদেশে আসার যে অনুভূতি সেটা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। দীর্ঘ ১০ বছর পর আমার জন্মস্থান কক্সবাজারে অবতরণ করলাম। জনগণের মাঝে যে বিজয় লক্ষ্য করছি সেটা অপূর্ব। ছাত্রজনতার আত্মদানের বিপ্লবে নতুন রক্তস্নাত বাংলাদেশ পেয়েছি আমরা।
তাই অভ্যন্তরীণ ও বহিঃশত্রæর হাত থেকে দেশরক্ষায় গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহŸান জানাচ্ছি।’ সংবর্ধনায় সালাহউদ্দিন পতœী ও সাবেক এমপি অ্যাডভোকেট হাসিনা আহমেদ, জেলা বিএনপির সভাপতি শাহজাহান চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শামীম আরা স্বপ্না, দপ্তর সম্পাদক আকতার চৌধুরী, উখিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি সরওয়ার জাহান চৌধুরী, চকরিয়া বিএনপি সভাপতি এনামুল হক, পেকুয়া বিএনপি সভাপতি বাহাদুর শাহ প্রমূখ বক্তব্য রাখেন। বেলা সাড়ে ১১টায় কক্সবাজার বিমানবন্দরে অবতরণ করেন সালাহউদ্দিন আহমেদ।
তাকে স্বাগত জানাতে সকাল থেকে কক্সবাজার বিমানবন্দরসহ আশপাশের এলাকায় বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের হাজারো নেতাকর্মী ও অনুসারীরা জড়ো হন। কয়েক কিলোমিটার জুড়ে রাস্তার দুপাশে সারিবদ্ধ হয়ে দাঁড়ান তারা।
বিমানবন্দরে বিএনপির কেন্দ্রীয় মৎস্যবিষয়ক সম্পাদক লুৎফর রহমান কাজল, জেলা বিএনপির সভাপতি শাহজাহান চৌধুরীসহ জেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতারা তাকে স্বাগত জানান। ২০১৪ সালের ১৪ জুন কক্সবাজারে রাজনৈতিক সমাবেশ শেষ করে ঢাকায় ফিরে যান সালাহউদ্দিন আহমদ। ২০১৫ সালের ১০ মার্চ ঢাকা থেকে নিখোঁজ হন তিনি। পরে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের শিলংয়ে ‘উদ্দেশ্যহীনভাবে ঘোরাফেরা’ করার সময় ওইবছরের ১১ মে তাকে আটক করে শিলং পুলিশ। তার নামে অবৈধ অনুপ্রবেশের মামলা করা হয়। এরআগে একই বছর ১০’মে রাতে রাজধানীর উত্তরা এলাকার একটি আবাসিক ভবন থেকে সালাহউদ্দিন আহমদকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় বলে অভিযোগ করা হয়।