বৃহস্পতিবার- ২১শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

dainiknilgiri.com

লোহাগাড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে লড়াই হবে দুই বেয়াইয়ের

আগামী ৫ জুন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে চট্টগ্রামের  লোহাগাড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। এ নির্বাচনকে ঘিরে গ্রামের সবখানেই ছেয়ে গেছে পোস্টার-ব্যানার ও ফেস্টুন। উন্নয়নের নানা প্রতিশ্রুতি নিয়ে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন প্রার্থীরা। চায়ের দোকানেও চলছে আলোচনা। লোহাগাড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে তিনজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

উপজেলা চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন  চুনতি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক দুই বারের চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী (ঘোড়া প্রতীক),  উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খোরশেদ আলম চৌধুরী (আনারস প্রতীক) ও লন্ডন প্রবাসী মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মাবুদ সৈয়দ (মোটর সাইকেল প্রতীক) নিয়ে মাঠে রয়েছেন।

ভোটারদের সাথে কথা বলে জানা যায়,  মূলত সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী ও খোরশেদ আলম চৌধুরীর মধ্যেই তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। তাদের মধ্যেই ভোট লড়াই চলছে। তারা দুই জনই পরস্পর সম্পর্কে বেয়াই হয়। ভোটারদের মন জয় করতে মরিয়া হয়ে মাঠে কাজ করছেন। সমর্থকরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার প্রচারনা চালাচ্ছেন। সিংহভাগ আওয়ামী লীগ নেতা কর্মীরা খোরশেদ আলম চৌধুরীর পক্ষে কাজ করছেন। অন্যদিকে সাধারণ মানুষ নিয়ে সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। তবে প্রার্থীরা বিএনপি জামায়াত সমর্থিত লোকজনকে ভাগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন।

অপরদিকে, লোহাগাড়া উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান প্রয়াত জিয়াউল হক চৌধুরী বাবুলের একটি নিজস্ব ভোট ব্যাংক রয়েছে লোহাগাড়ায়। সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী তার ঘনিষ্টজন হিসেবে এলাকায় পরিচিতি রয়েছে। বাবুল সমর্থিত লোকজন তার পক্ষে কাজ করছেন। তবে, খোরশেদ আলম চৌধুরীও ওই ভোট ব্যাংকে আঘাত হানার চেষ্টা করছেন।

ঘোড়া প্রতীক প্রার্থী সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আমি বিজয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী। কারণ আমার অতীত রাজনৈতিক ও সামাজিক জীবন পর্যালোচনা করে মানুষ আমাকে ভোট দিবে।একটি মাদকমুক্ত, আধুনিক ও স্মার্ট উপজেলা গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন ও ব্যক্ত কনেন তিনি।

আনারস প্রতীক প্রার্থী খোরশেদ আলম চৌধুরী বলেন, দীর্ঘদিন ধরে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছি।সব শ্রেনী পেশার মানুষদের পাশে থাকার চেষ্টা করেছি, উপকার ছাড়া ক্ষতি করিনি।আশা করি জনগন আমাকে মূল্যায়ন করবেন।

মোটরসাইকেল প্রতীক প্রার্থী আব্দুল মাবুদ সৈয়দ বলেন,আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা।সারাজীবন ন্যায়ের পক্ষে থেকেছি  দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে মানুষের কল্যাণে কাজ করেছি। ইনশাআল্লাহ জনগন আমাকে বিপুল ভোটে বিজয়ী করবেন।

চেয়ারম্যান প্রার্থীরা ভোটারের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরে সমর্থন আদায়ের পাশাপাশি ভোটার উপস্থিতি বাড়ানোর চেষ্টাও করছেন তারা। বিজয়ের ব্যাপারে তিনপ্রার্থীই আশাবাদী। ভোটের মাঠে প্রচার-প্রচাণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রার্থীরা। এবারের নির্বাচনে পছন্দের প্রার্থীকে উৎসবমুখর পরিবেশে ভোটাধিকার প্রয়োগ করার আশা করছেন অনেকেই।প্রচার-প্রচারণা ও গনসংযোগে প্রার্থীরা ভোটারদের অংশগ্রহণ বাড়াতে স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে ভোট কেন্দ্রে যাওয়ার আহ্বান জানান।

লোহাগাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ রাশেদুল ইসলাম বলেন, নির্বাচন শতভাগ সুষ্ট,  নিরপেক্ষ ও প্রভাবমুক্ত হবে।বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মো: ইনামুল হাসান বলেন,  নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করতে সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করছে কমিশন।নির্বাচনী আচরন বিধি মেনে চলতে সব প্রার্থীকে কঠোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, উপজেলার ৯টি ইউনিয়নে মোট ভোটার ২ লাখ ২৩ হাজার ৬২৬ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ১৯ হাজার ১০৮ জন ও মহিলা ভোটার ১ লাখ ৪ হাজার ৫১৮ জন।

7Shares

আরও পড়ুন

সম্পর্কিত আরো খবর

জনপ্রিয়