বান্দরবানের লামা উপজেলার বিভিন্ন বিভাগীয় কর্মকর্তা,সুশীল সমাজ ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র প্রতিনিধিদের সাথে বান্দরবান জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের মতবিনিময় সভা বুধবার (২২ জানুয়ারি) লামা উপজেলা হল রুমে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
লামার স্থানীয় সিনিয়র কয়েকজন সাংবাদিক
জানান, জুলাই বিপ্লব পরবর্তী বৃহত্তর লামা উপজেলায় সকল সেক্টরে স্বৈরাচারের দোসরদের প্রভাব থেকে গেছে, যা বৈষম্য বিরোধী ছাত্ররা আলোচনায় এনেছেন। কিন্তু ৫ আগস্টের পর থেকে এখন পর্যন্ত সকল ঘটনাবলির ওপর কোনো আলোচনা বা মতামত প্রকাশের ক্ষেত্রে গুরুত্ব দেয়া হয় নাই। স্থানীয় সচেতন সমাজ জানান, বান্দরবান জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নিয়োগ প্রাপ্তির তিন মাস হলেও এখন পর্যন্ত জুলাই বিপ্লবের চেতনার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ কার্যক্রম গুলোতে তেমন কোনো উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ এখনো দেখা যায়নি। বৃহত্তর লামায় বিভিন্ন ইউনিয়নে জনজীবনে নানান দুর্ভোগ রয়েছে। লুটতরাজ, ভূমি দখল, মামলা বানিজ্য, অপহরণ, চাঁদাবাজী, অগ্নি সংযোগের মতন কর্মকান্ড এই উপজেলার সাধারণ মানুষের ত্রাহিত্রাহি অবস্থা। মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন পেশা শ্রেণির মানুষের মধ্য থেকে যে মতের বিনিময় হওয়ার কথা ছিলো সেটি হয় নাই।
অথচ এসব জুলাই বিপ্লবী চেতনার মূল দাবি গুলোর অন্যতম হলেও তার কোনোটাই মতবিনিময় সভায় প্রতিফলিত হয়নি। নৃগোষ্ঠী প্রান্তিক জুমিয়া পরিবারগুলোর জীবন কেমন যাচ্ছে; হেডম্যান কারবারীদের মাধ্যমে জানার প্রয়োজন মনে করেন নাই মতবিনিময় সভার কর্তারা। যা জুলাই বিপ্লবী চেতনার সাথে সাংঘর্ষিক বলে জানান সংবাদ কর্মিরা। মতবিনিময় সভার স্বাগতিক
বক্তব্যে একবারও বিপ্লবী সেই সকল শহীদদেরকে স্মরণ করেননি এমনকি তাদের নিয়ে কোনো কথাই বলেননি। মতবিনিময় সভা নিয়ে এমনটিই অভিযোগ করছেন লামা সিনিয়র সংবাদ কর্মিরা। সভায় বৈষম্য বিরোধী দুই ছাত্র মোঃ রফিক ও শরিফ জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের চেতণা ধারণ করে মৌলিক ও সমুচিত কিছু উদ্যােগ গ্রহনের আহ্বান জানালেও অন্যরা শুধু নিজেদের জাহির করেছেন। মুক্ত আলোচনার সুযোগ করে না দিয়ে অনুষ্ঠানকে একটি আমিত্ব আর তেলবাজির অনুষ্ঠানে পরিণত করেছেন। ব্যানারে মতবিনিময় সভার ‘আয়োজক উপজেলা প্রশাসন’ লেখা থাকলেও সভার নিয়ন্ত্রণ করেন কতিপয় চিহ্নিত চাটুকার। হ-য-ব-র-ল অনুষ্ঠানের ডিজাইন কে করেছে জানতে চাওয়া হয় লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (অদা:) এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্টেট লামা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রুপায়ন দেব এর নিকট। তিনি জানান, প্রোগ্রামে সুশীল সমাজের কারা মতবিনিময় করবেন, সে তালিকা চেয়ারম্যান
মহোদয়ের সফর সঙ্গীরাই করেছেন।
এদিকে ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ইয়াংছা এলাকায় অবস্থিত জীনামেজু টেকনিক্যাল ইন্সটিটিউট ও আশ্রমে শীতবস্ত্র বিতরণ করেন।লামা পর্যটন মালিক সমিতির পক্ষ থেকে বান্দরবান জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যাপক থানজামা লুসাই কে ফুল দিয়ে বরণ করেন। এ সময় লামার মিরিঞ্জা পর্যটন এলাকায় রাস্তা, বিদ্যুৎ, ময়লা নিষ্কাশন, পানির ব্যবস্থা সহ উন্নয়নে নানা পদক্ষেপ গ্রহণে আবেদন আশ্বাসদেন।লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে উপস্থিতি এবং উপজেলা হল রুমে লামা উপজেলা পর্যায়ের বিভিন্ন বিভাগীয় কর্মকর্তা, সুশীল সমাজ ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র প্রতিনিধিদের সাথে মতবিনিময় সভায় যোগদান দেন।
মতবিনিয় সভাশেষে লামা উপজেলায় পরিষদ কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন প্রকল্প পরিদর্শন করেন। তিনি বিকালে লামা ইসলামিয়া ফাজিল ডিগ্রি মাদ্রাসার এতিমখানার শিশুদের শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে যোগ দেন।