পাহাড়-টিলা রুপ নিচ্ছে সমতল ভূমিতে। অবাধে মাটি কাটার ফলে হারিয়ে যাচ্ছে গহিন বনও। আইনের তোয়াক্কা না করে বান্দরবানের লামায় নির্বিচারে পাহাড় কেটে সাবাড় করা হচ্ছে। দিনে রাতে শত শত ট্রাক মাটি ইটভাটায় নেওয়া হলেও নিরব ভূমিকায় স্থানীয় প্রশাসন। অভিযোগ বান্দরবানে পরিবেশে অধিদপ্তরকে ম্যানেজ করেই চলছে পাহাড় কাটা।
জানা যায়, উপজেলার ফাইতং ইউনিয়নে লম্বাশিয়া এলাকার ডেসটিনির প্রায় ১০ একর পাহাড় কাটা হয়েছে। এক্সকেভেটর দিয়ে প্রায় কয়েক মাস ধরেই দিনে রাতে সমানতালে একের পর এক পাহাড় কেটে তৈরি করেছে সমতল ভূমি। সেই পাহাড়ের মাটি যাচ্ছে এস এম বি ইটভাটায়।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার ফাইতং ইউনিয়নের লম্বাশিয়া এলাকায় ডেসটিনির সুউচ্চ পাহাড়। একটু ভেতরে গেলেই দেখা যাই প্রায় ১০ একর পাহাড় কাটা হয়। সুউচ্চ পাহাড় কেটে করা হচ্ছে সমতল ভূমি। সে মাটি নিয়ে যাচ্ছে নাজু কোম্পানি (পান নাজু) নেতৃত্বে এস এম বি ইটভাটায়।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ডেসটিনির পাহাড় থেকে মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে একটি চক্র। যার নেতৃত্ব দিচ্ছে নাজু কোম্পানি (পান নাজু), বাগান পাহাদার মো: হারুন, যুবলীগ নেতা থোয়াছানু মার্মা । তাদের চক্রটি বেশ শক্তিশালী হওয়াই এলাকার কেউ মুখ খুলতে সাহস পাই না। এমনকি দিন রাত পাহাড় কাটছে প্রশাসনের কোন ভূমিকা দেখা যাচ্ছে না।
বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ (সংশোধন) আইনে স্পষ্ট ভাবে পাহাড় বা টিলা কাটার ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। জাতীয় স্থার্থে পাহাড় কাটার প্রয়োজন হলে দেখা দিলেও পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতির বাধ্যবাধকতা আছে। এসব কোন কিছুই তোয়াক্কা করছে না ইটভাটার মালিকারা।
পাহাড় কাটার সাথে জড়িত নাজু কোম্পানি (পান নাজু) বলেন, পরিবেশ অধিদপ্তর বান্দরবানকে ম্যানেজ করে পাহাড় কাটছি। আমি আগে কিছু দিন কেটেছি এখন কাটছি না। আর পাহাড় না কাটলে আমরা ইটভাটা করবো কি ভাবে, মাঝে মাঝে তো পাহাড় কাটতে হবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয়রা বলেন, কিছু দিন আগে দিনে পাহাড় কেটে ট্রাক করে মাটি ইটভাটায় নেওয়া হয়েছিলো, কিন্তু দিন যেতেই কৌশল পাল্টিয়ে এখন রাত চলে পাহাড় কাটার কর্মযজ্ঞ।
এই বিষয়ে লামা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শান্তনু কুমার দাশ বলেন, পাহাড় কাটার সাথে জড়িতদের অভিযান পরিচালনা করে আইনের আওতায় আনা হবে।
ম্যানেজ করার বিষয়টি অস্বীকার করে বান্দরবান পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ফখর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, পাহাড় কাটার বিষয়টি আমি আপনার থেকে শুনেছি। আমি খুব দ্রুত পাহাড় কাটার স্থান পরিদর্শন করে আইনী ব্যবস্থা গ্রহন করবো।