খরচ পোষাতে না পেরে বান্দরবানে অনির্দিষ্ট কালের জন্য হোটেল-রেস্টুরেন্ট বন্ধ করে দেয়া হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন হোটেল-রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ীরা। আজ মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) সকালে হোটেল-রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে এতথ্য জানা যায়।
ব্যবসায়ীরা জানান, সেবার মাধ্যমে সামান্য লাভের আশায় জেলা জুড়ে কয়েক শত লোক পর্যটন খাতে বিনিয়োগ করেছে। এসব বিনিয়োগকারীদের মধ্যে অধিকাংশই ঋণগ্রস্ত। এদের সাথে গণপরিবহন, চাঁদের গাড়ি, বার্মিজ ষ্টোর, ইঞ্জিন চালিত বোট, থ্রি হুইলার, ব্যাটারি চালিত অটোরিক্সাসহ বিভিন্ন খাতে যুক্ত হয়ে জীবিকা নির্বাহ করছে অন্তত ২০ হাজারেরও অধিক জনগণ। যা সম্পূর্ণ পর্যটক নির্ভর। তবে ২০১৯ সাল থেকে করোনা ভাইরাস, বান্দরবানে ভয়াবহ বন্যা, সাম্প্রতিক সময়ে পাহাড়ের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কুকি চিন এর সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের পরিপ্রেক্ষিতে লাগাতার ভাবে বান্দরবান এর পর্যটন স্পটগুলোতে পর্যটক ভ্রমনে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল।
বিগত কয়েকমাস পূর্বে সীমিত পরিসরে কিছু পর্যটন স্পট পর্যটকদের ভ্রমনের জন্য খুলে দিলেও দেশেরবিরাজমান রাজনৈতিক অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে কাঙ্খিত পর্যটক, ভ্রমনে আসতে পারেননি। ফলে এখনকার
পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসাগুলোতে ব্যাপক ধ্বস নামে।সর্বশেষ গত ৮ অক্টোবর থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত পর্যটকদের বান্দরবান ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করেছে জেলা প্রশাসন। যার কারনে ব্যয়ভার মেটাতে না পেরে কর্মী ছাঁটায়সহ প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছে অনেক বিনিয়োগকারী।
হোটেল ডিমোরের ম্যানেজার হ্যাপী মারমা জানান, তিন তারকা মানের তাদের হোটেলটিতে দৈনিক অন্তত ৫০ হাজার টাকা খরচ আছে।পর্যটকের উপস্থতি না থাকায় তাদের হোটেলটি চলতি মাসের গত ৫ তারিখ থেকে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
রেস্টুরেন্ট মালিক সমিতির সভাপতি গিয়াস উদ্দীন মাস্টার জানান, দীর্ঘদিন ধরে পারিপার্শ্বিক কারনে পর্যটকের উপস্থিতি অশানুরুপ না থাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সম্মূখীন হয়েছে রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ীরা। খরচ পোষাতে না পারায় ইতি মধ্যে বেয়াই বাড়ি, কলাপাতাসহ জেলা সদরের প্রায় ২৫ টি রেস্টুরেন্ট বন্ধ হয়ে গেছে। আগামী ৩১ তারিখের পর চলতি ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা না হলে আরও রেস্টুরেন্ট বন্ধ হয়ে যাওয়া বলে আশঙ্কা করছেন তিনি।
বান্দরবান আবাসিক হোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিন জানান, ২০১৯ সালের শেষের দিক থেকে ক্রমান্বয়ে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন বান্দরবান জেলার পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে হোটেলের চলমান খরচ বহন করতে না পারায় অনেক হোটেলের মালিকানা পরিবর্তন হয়েছে। বন্ধ করে দিয়েছে হোটেল ডিমোর, লাভা তং সহ আরও কয়েকটি আবাসিক হোটেল।আগামী ৩১শে অক্টোবর পর্যন্ত পর্যটক ভ্রমণে দেয়া নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা না হলে অন্যান্য হোটেল গুলো বন্ধ করে দেয়া ছাড়া কোন উপায় থাকবে না।
তিনি আরও বলেন, ৩১ শে অক্টোবর পরবর্তী ভ্রমণের নিষেধাজ্ঞা শিথিল করতে জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দপ্তরে হোটেল-রেস্টুরেন্টসহ পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যাবসায়ীদের পক্ষ থেকে জেলাপ্রশাসকসহ বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করা হয়েছে।
বান্দরবান জেলা প্রশাসক শাহ্ মোজাহিদ উদ্দিন বলেন, আমরা তো আশাবাদী। পার্বত্য উপদেস্টার সাথেও কথা হয়েছে। ৩০ তারিখে মিটিংও আছে।