মঙ্গলবার- ৩রা জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

dainiknilgiri.com
প্রচ্ছদ /

বান্দরবানে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মেহেদী হাসান-

পাহাড়ে কোন অশুভ শক্তিকে সুযোগ দেওয়া হবে না

চুক্তির পর আমরা অনেক দূর এগিয়েছি, কিন্তু এখনো আস্থার সংকট রয়েছে

বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্যদিয়ে পার্বত্য শান্তি চুক্তির ২৭তম বর্ষপূর্তি পালিত হয়েছে বান্দরবানে। পার্বত্য জেলা পরিষদ আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও রক্তদান কর্মসূচীর মধ্যদিয়ে দিবসটি পালন করে।

সোমবার সকালে ক্ষুদ্র নৃ-জনগোষ্ঠি সাংস্কৃতিক ইনষ্টিটিউটে সরকারী-বেসরকারী দপ্তরের কর্মকর্তা, কর্মচারী সুশিল সমাজের অংশগ্রহণে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন ৬৯ পদাতিক রিজিয়নের কমান্ডার ব্রিগিডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ মেহেদী হাসান।

এসময় তিনি বলেছেন, শান্তি চুক্তির সময় অন্তত ৫২বার উপজাতী শব্দটি উল্লেখ করা হয়েছে। সাধারন মানুষের মাঝে এই নিয়ে কোন প্রশ্ন নেই। কিন্তু পাহাড়ে হঠাৎ উপজাতী-আদিবাসী নিয়ে অস্থিরতা তৈরী করেছে একটি স্বার্থনেষী মহল। বাইরে থেকে তারা ইন্দন যোগাচ্ছে। সুযোগ নিয়ে কোন দুষ্টচক্র যাতে শূণ্যতায় ঢুকে অস্থিরতা তৈরী করতে না পারে সেজন্য সবাইকে সর্তক থাকতে হবে। পাহাড়ে কোন অশুভ শক্তিকে সুযোগ দেওয়া হবে না।

তিনি বলেন, চুক্তির পর আমরা অনেক দূর এগিয়েছি। কিন্তু আস্থার সংকট আমাদেরকে পিছিয়ে দিচ্ছে। শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য প্রথমে নিজেদের মধ্যে বিবেদ সরিয়ে ফেলতে হবে।

রিজিয়ন কমান্ডার আরো বলেন, মানবউন্নয়নে জাতীয়মানের সঙ্গে আমরা বান্দরবান কিংবা পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষ খুব একটা পিছিয়ে নেই। শান্তি চুক্তির ২৭ বছরে এখানে প্রায় ১২শ কিলোমিটার রাস্তা, ৭শ কিলোমিটার কাচা রাস্তা, ১হাজার কিলোমিটারের চেয়ে বেশি সীমান্ত সড়ক হয়েছে। স্কুল, কলেজ কয়েকগুণ বেড়েছে। পার্বত্য জেলায় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, কারিগরি কলেজ, মেডিকেল কলেজ হয়েছে। স্বাস্থ্যখাতে উন্নয়ন হয়েছে।

অর্থাৎ পাহাড় নিয়ে সরকারের সদ্দিচ্ছার কারনে এমন অভ‚তপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে। আঞ্চলিক বিবেদ সংঘাত পরিহার করতে পারলে আমাদের অগ্রযাত্রা আরো দ্রæত হবে।

সেনা কর্মকর্তা মেহেদী হাসান আরো বলেন, পার্বত্য এলাকায় সেনাবাহিনী রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব ও মানুষের নিরাপত্তায় নিয়োজিত রয়েছে। ২৭ বছরের পথপরিক্রমায় সাড়ে ৪শ সদস্য নিহত হয়েছে। সমপরিমাণ আহত হয়েছে। অনেকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। একই সাথে পুলিশ, আনসার, গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর পাশাপাশি পাহাড়ী-বাঙ্গালী মানুষেরও ক্ষতি হয়েছে। আমরা যা অর্জন করেছি তার মূল্য সমপরিমাণ ছিল। সেই ক্ষেত্রে দেশের সার্বিক মান বিবেচনা করলে আমাদের অর্জন কম নয়।

শান্তি চুক্তি নিয়ে দায়বদ্ধতার আঙ্গুল শুধু সরকারের দিকে কেন প্রশ্ন করে এই সেনা কর্মকর্তা আরো বলেন, চুক্তিতে অনেককিছু ছিল, আমরা পক্ষগুলো কতটুকু পালন করেছি। আর পালন করলে কেন পাহাড়ে এখনো অস্থিরতা বিরাজ করছে। শান্তি শৃংখলা স্থিতিশীলতার জন্য পাহাড়ে অনেকগুলো ক্যাম্প, ব্রিগেড ছিল। কিন্তু চুক্তির পর ব্রিগেডসহ আড়াই’শ ক্যাম্প তুলে নেওয়া হয়েছে।

বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ কর্তৃক আয়োজিত আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যাপক থানজাসা লুসাই, পুলিশ সুপার শহিদুল্লাহ কাওছার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক এএসএম মনজুরুল হক, জেলা পরিষদের মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুম বিল্লাহ প্রমুখ।
এর আগে শান্তি চুক্তির বর্ষপূর্তি উপলক্ষে বান্দরবান সদর হানপাতালে রক্তদান কর্মসূচী উদ্বোধন করেন পার্বত্য জেলা পরিষদ সদস্য ও স্বাস্থ্য বিভাগের কনভেনর অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ আবুল কালাম।

19Shares

আরও পড়ুন

সম্পর্কিত আরো খবর

জনপ্রিয়