সোমবার- ২রা জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

dainiknilgiri.com
প্রচ্ছদ /

অর্থ আত্মসাৎ, নিয়োগ বাণিজ্য, অনিয়ম

নাইক্ষ্যংছড়িতে অধ্যক্ষের অপসারণ ও শাস্তি চাইলেন ২২ শিক্ষক-কর্মচারী

অধ্যক্ষ সৈয়দ হোসাইন সুস্থ সবল মানুষ হিসেবে বান্দরবান জেলা সদর, জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে ফুরফুরে মেজাজে ঘুরাঘুরি করতে দেখা যায়।

সমালোচনা যেনো পিছু ছাড়ছে না নাইক্ষ্যংছড়ি মদিনাতুল উলুম মডেল ইনস্টিটিউট ডিগ্রী মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মোহাম্মদ সৈয়দ হোসাইনের। নানা ঘটনায় বছর জুড়েই সমালোচনার পাত্র হিসেবে দাড়িয়েছেন তিনি। সম্প্রতি দেশে পটপরিবর্তনের পর ছাত্রজনতার পক্ষ থেকে দাবী উঠে তাঁর পদত্যাগের। মানববন্ধন ও বিক্ষোভও হয়েছে প্রতিষ্ঠানে।

এদিকে অধ্যক্ষকে আইনের আওতায় আনার দাবীতে লিখিত অভিযোগ করেছেন মাদ্রাসার শিক্ষক, শিক্ষিকা ও কর্মচারীরা। কিন্তু নাছোঁড়বান্দা অধ্যক্ষ আন্দোলন বা অভিযোগ বিষয়ে গা ভাসাননি। হার্টের ব্যাথা দেখিয়ে ছুটে নিয়ে লাপাত্তায় রয়েছেন। শিক্ষক, শিক্ষিকা ও কর্মচারীদের অভিযোগ, অধ্যক্ষ সৈয়দ হোসাইন অনিয়ম-দুর্নীতি, নিয়োগ বানিজ্য, জাল জালিয়াতির মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগ দিয়েছেন।

এছাড়া ছাত্রীর সাথে অনৈতিক সম্পর্ক, নারী কেলেংকারী, জালিয়াতির মাধ্যমে কমিটি গঠন, স্বজনদের চাকুরী প্রদান করেছেন। অভিযোগে আরো জানা যায়, শিক্ষক, কর্মচারীর উচ্চতর স্কেল প্রাপ্তির ব্যাপারে ঘুষ গ্রহণ, একমাত্র শিক্ষিকাকে আর্থিক ও মানসিক হয়রানি করেছেন এবং মাদ্রাসার আয় ব্যায়ের ক্যাশ পরিবর্তন করে অর্থ আত্মসাতসহ অসংখ্য অভিযোগে অভিযুক্ত।

এসব নানা ঘটনার প্রসঙ্গ এনে গত ২৯ আগস্ট ২২ শিক্ষক-কর্মচারীর স্বাক্ষরিত একটি লিখিত অভিযোগ উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে দেওয়া হয়। উক্ত অভিযোগে তাঁরা অধ্যক্ষ সৈয়দ হোসাইনকে আইনের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তির দাবী জানান। গত ২৭ আগস্ট অধ্যক্ষ সৈয়দ হোসাইন এর পদত্যাগ দাবীতে মাদ্রাসার সামনে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ।

এসময় অধ্যক্ষের স্বজন ও তাঁর পক্ষের লোকজন আন্দোলনরত শিক্ষীর্থীদের উপর হামলা চালায়। এসময় বহুসংখ্যক ছাত্র-ছাত্রী আহত হয়। খবর পেয়ে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে যান উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ জাকারিয়া। এরপর ১-২ সেপ্টেম্বর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নির্দেশক্রমে মাদরাসা বন্ধ ঘোষণা করা হয়।

এদিকে অধ্যক্ষ সৈয়দ হোসাইন আন্দোলন চলাকালীন (২৭আগস্ট) ছুটির আবেদন করে সমালোচনার জন্ম দিয়েছেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে প্রেরিত ওই ছুটির আবেদনে অধ্যক্ষ বলেছেন ‘হার্টে ব্যাথা ও শারীরিক অবস্থার বেগতিক হওয়ায় পারিবারিকভাবে তাঁকে চট্টগ্রামে নেয়া হয়।

বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন’। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অধ্যক্ষ সৈয়দ হোসাইন এর একাধিক ছবি ছড়িয়ে পড়েছে। যেখানে তাঁকে সুস্থ সবল মানুষ হিসেবে বান্দরবান জেলা সদর, জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে ফুরফুরে মেজাজে ঘুরাঘুরি করতে দেখা যায়।

এই প্রসঙ্গে জানতে অধ্যক্ষ মাওলানা মোহাম্মদ সৈয়দ হোসাইন এর ব্যবহৃত মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে ফোনটি রিসিভ করেন তার স্ত্রী। হুজুর বাইরে জানিয়ে তিনি সংযোগটি কেটে দেন। পরে পুনরায় চেষ্টা করেও তার বক্তব্য নেওয়া যায়নি।

এদিকে নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের মেম্বার ফয়েজ আহমদ বলেন, অধ্যক্ষ সৈয়দ হোসাইন আওয়ামীলীগ মনোনীত একজন দুর্নীতিবাজ শিক্ষক। পুরো প্রতিষ্ঠানে তার নানা অনিয়ম ও দুর্নীতিতে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। স্বৈরচার আওয়ামী লীগের পতনের পর সুচতুর অধ্যক্ষ নিজের মুখোষ পাল্টানোর চেষ্টা করছেন।

37Shares

আরও পড়ুন

সম্পর্কিত আরো খবর

জনপ্রিয়