তীব্র তাপদাহ এবং অনাবৃষ্টির ফলে রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার ৫ টি ইউনিয়ন এর প্রায় শতাধিক ছড়া শুকিয়ে গেছে। ফলে সুপেয় পানির সংকটে ভুগছেন হাজারও এলাকাবাসী।
কিছু কিছু এলাকায় গভীর নলকুপ থাকলেও ছড়ায় পানি না থাকায় পানির স্তর নীচে নেমে যাওয়ায় প্রয়োজনীয় পানি পাচ্ছেন না এলাকাবাসী। ফলে দূরবর্তী নদী হতে খাবার পানি এবং ব্যবহারের পানি সংগ্রহ করে এলাকাবাসীকে নিত্য প্রয়োজনীয় গৃহস্থালি কাজ সারতে হচ্ছে।
সোমবার (২৯ এপ্রিল) সকাল ৯ টা হতে সাড়ে ১১ টা পর্যন্ত কাপ্তাই উপজেলার ওয়াগ্গা ইউনিয়ন এর ৯ নং ওয়ার্ডের শিলছড়ি ছড়া, ভেলাপ্পা পাড়া ছড়া এবং ৩ নং চিৎমরম ইউনিয়ন ৩ নং ওয়ার্ডের জামাইছড়ি এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, পাড়ার উপর বয়ে যাওয়া ছড়া গুলো শুকিয়ে গেছে। কোথাও এক ফোঁটা পানির দেখা মেলে নাই। পানির সংকটে হা হুতাশ করছেন এলাকাবাসী। এসময় এক কলস পানির জন্য কয়েক কি: মি: হেঁটে কর্ণফুলি নদী হতে পানি আনতে দেখা যায় এলাকাবাসীকে।
এসময় কথা হয় শিলছড়ির মহাজন পাড়ার বাসিন্দা তপন মারমা, খুকি ইসলাম এবং শিলছড়ি বাজারের মো: শাহআলম এর সাথে। তাঁরা এই প্রতিবেদককে জানান, সাধারণত মার্চ মাস হতে জুন মাসের আগ পর্যন্ত ছড়া গুলোতে পানি থাকেনা। থাকলেও সামান্য পরিমান থাকে। তবে এই বছরের অবস্থা ভয়াবহ। তীব্র তাপদাহে ছড়া গুলো শুকিয়ে গেছে। ফলে আমাদের এলাকার শত শত পরিবার সুপেয় পানির সংকটে ভুগছেন। কয়েক কি: মি: হেঁটে গিয়ে আমরা কর্ণফুলি নদী হতে খাওয়ার এবং ব্যবহারের পানি সংগ্রহ করছি। বৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত এই সংকট দূর হবে না।
চিৎমরম ইউনিয়ন এর ৩ নং ওয়ার্ডের জামাইছড়ি এলাকার বাসিন্দা ক্যাংমং মারমা এবং অথুই মারমা বলেন, ছড়ায় এখন পানি নেই। কর্ণফুলি নদীতে জোয়ার আসলে ছড়া দিয়ে একটু পানি আসে, আবার ভাটা পড়লে পানি নদীতে নেমে যায়। আমরা পানির জন্য খুব কষ্টে আছি।
১০০ নং ওয়াগ্গা মৌজার হেডম্যান অরুণ তালুকদার বলেন, আমার মৌজার অধীন দেবতাছড়ি ছড়া, ওয়াগ্গাছড়া, ফইরা মুরং ছড়া, নুনছড়ি, মধুছড়ি ছড়া সহ ১৫ টির অধিক ছড়া আছে । এইছাড়া উপজেলার ৫ টি ইউনিয়ন এ শতাধিক ছড়া আছে। তীব্র তাপদাহ এবং অনাবৃষ্টির ফলে এখন ছড়া গুলো শুকিয়ে গেছে। ফলে খাবার পানি সহ ব্যবহারের পানির সংকটে ভুগছেন হাজারও জনগণ।
১ নং চন্দ্রঘোনা ইউনিয়ন এর ১,২ ও ৩ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য আথুই তনচংগ্যা বলেন, আমার এলাকার রেশমবাগান ছড়াতে এক ফোঁটা পানি নাই। এলাকাবাসী ছড়াতে গভীর গর্ত খুঁড়েও পানি পাচ্ছেন না।
২ নং রাইখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মংক্য মারমা বলেন, আমার ইউনিয়ন এর
বালামছড়া, গ্রংরি ছড়া, কালামাইস্যা ছড়া, জগনাছড়ি ছড়া সহ অনেক ছড়া আছে। সব কটি ছড়াতে এখন পানি নেয়। তীব্র পানি সংকটে ভুগছেন এলাকাবাসী। বৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত এই সংকট দূরীভুত হবে না।
কাপ্তাই জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপ সহকারী প্রকৌশলী লিমন চন্দ বর্মন বলেন, সাধারণত মার্চ এপ্রিল মাসে বৃষ্টি না হওয়ার কারনে ছড়া এবং ঝর্ণা গুলোর পানি শুকিয়ে গেছে। বৃষ্টি হলে পুনরায় পানির সংকট নিরসন হবে।