বান্দরবান আলীকদমে নবম শ্রেণির এক ছাত্রীকে শ্লীলতাহানি অভিযোগে আলীকদম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বদিউল আলম (৪৮) ও সহকারী শিক্ষক বাবলুর রহমান ওরফে জোবাইর(৩৩) নামে দুই শিক্ষক কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
আজ বুধবার(৩ জুলাই) বান্দরবান জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট এ.এস.এম এমরান তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
আলীকদম বালিকা উচ্চ উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বদিউল আলম বরিশাল জেলার বরিশাল সদরের কাসেম আলী বেপারীর ছেলে ও একই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. বাবলুর রহমান ওরফে জোবাইর যশোর জেলার কেশবপুর থানার সাগরদাড়ি গ্রামের মো. শহিদুল ইসলামের ছেলে। বর্তমানে তাঁরা দুইজনই আলীকদম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষকতা করেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, গত ৯ মে স্কুলে যাওয়ার পর সকাল অনুমানিক ৯ টার দিকে প্রধান শিক্ষক ভুক্তভোগী ছাত্রীকে ডেকে স্কুলের পাশে তার থাকার ঘরে নিয়ে যায়। পরে রুম পরিষ্কার করতে বলেন। তার বসবাসের রুম পরিষ্কার করতে যাই। রুম পরিষ্কার করা শেষে প্রধান শিক্ষক আমাকে খাবারের থালা-বাটি ধুয়ে দিতে বলে। খাবারের হাড়িপাতিল ও বড় বাটি পরিষ্কার করার একপর্যায়ে প্রধান শিক্ষক বদিউল আলম ভুক্তভোগী ছাত্রীর পিছনে এসে দুই হাতে জড়িয়ে ধরে এবং শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে স্পর্শ করতে থাকে। বাঁধা দিলে তিনি বিয়ে করবেন মর্মে বারবার বলতে থাকে।
এ ঘটনার পরে ভুক্তভোগী ছাত্রী স্কুলে গেলে প্রধান শিক্ষক ভুক্তভোগী ছাত্রীকে বিভিন্ন সময় খারাপ ইশারায় ও ইঙ্গিতে তার রুমের মধ্যে ডাকলে ভুক্তভোগী ছাত্রী কোন রকম সাড়া না দিলে তিনি লাল টিসি দিয়ে স্কুল হতে বের করে দিবে মর্মে হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদান করে।
পরে ঘটে যাওয়া বিষয়টি জানাজানি হবে বুঝতে পেরে সু-কৌশলে গত ৮ জুন স্কুল ট্রান্সফার সার্টিফিকেট দিয়ে স্কুল হতে বের করে দেন। ভুক্তভোগী ছাত্রীকে ট্রান্সফার সার্টিফিকেট দেওয়ার কারণ মা-বাবা জানতে চাইলে তার সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনার বিষয়টি খুলে বলেন। ভুক্তভোগী ছাত্রীর পিতা-মাতা বিষয়টি আত্মীয়-স্বজনের সাথে আলাপ-আলোচনা করে থানায় এসে এজাহার দায়ের করেন।
আদালত পুলিশের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা (জিআরও) বিশ্বজিৎ সিংহ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ছাত্রী শ্লীলতাহানি অভিযোগে দুই শিক্ষকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। তাদেরকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এই দিকে,গত (৪ জুন) ছাত্রীদের শ্লীলতাহানির প্রতিবাদ জানিয়ে মানববন্ধনের চেষ্টা করলে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের আশ্বাসে বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের চলমান সকল সমস্যা সমাধান করা হবে বলে জানালে শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন স্থগিত করেন। বিভিন্ন সময় প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি, অশালীন মন্তব্যের বিষয়টি সবার সামনে প্রকাশ ও প্রতিবাদ করায় বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীকে ছাড়পত্র দেন এই প্রধান শিক্ষক।