কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী ফজলুল করিম সাঈদীর দোয়াত কলম মার্কার পক্ষে কাজ করায় ক্ষিপ্ত হয়ে অফিস ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, লুটপাট ও মল নিক্ষেপের ঘটনায় চকরিয়া থানায় দায়ের করা এজাহার ভিন্ন দিকে প্রভাবিত করতে নিজের দোকানে আগুন লাগিয়ে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের পাঁয়তারার অভিযোগ উঠেছে।
গত ২১মে’২৪ইং রাত আনুমানিক ৩ ঘটিকার দিকে উপজেলার সাহারবিল ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের কোরালখালী দক্ষিণ পাড়া গ্রামের মৃত আবুল খাইরের পুত্র আবদুল জলিলের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও তাদের বসতঘরে হামলা, লুটপাট ও মল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে।
এঘটনায় মৃত আবুল খাইরের স্ত্রী জন্নাত আরা বেগম (৭২) বাদী হয়ে ২২মে সন্ধ্যায় থানায় স্থানীয় জিন্নাত আলীর পুত্র এরশাদ আলম ও মোর্শেদ আলম, আবদু রহিমের পুত্র জমির উদ্দিন বাবুল, মোঃ নুরুর পুত্র মোঃ শাহিন, আবুল কালামের পুত্র মোঃ রুবেল, তারেকুল ইসলামের পুত্র মোঃ হাসান ও আবু তাহের, মোঃ আজিজের স্ত্রী পারভীন আক্তার, জিন্নাত আলীর পুত্র খোর্শেদ, আবদু ছাত্তারের স্ত্রী কমরু বেগম সহ অজ্ঞাত নামা আরো ৭/৮ জনের নামে থানায় এজাহার দায়ের করেন।
বাদীর ছেলে আবদুল জলিল বলেন, আমাদের পক্ষে দায়ের করা এজাহারের প্রেক্ষিতে থানার উপপরিদর্শক মোঃ ইব্রাহিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আমাদের দায়ের করা অভিযোগ পরবর্তী মামলা থেকে বাঁচতে এবং উল্টো আমাদেরকে ফাঁসাতে অভিযুক্ত পারভীন আক্তারের স্বামী আবদুল আজিজের দোকানের মালামাল অন্যত্রে সরিয়ে নিয়ে ২৩ তারিখ রাতে নিজেরাই আগুন লাগিয়ে সাজানো হয় নাটক।
জান্নাত আরা বেগমের দায়ের করা এজাহার সুত্রে জানাগেছে, চলতি ২০২৪ইং সনের ২১মে চকরিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্টিত হয়েছে। নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী ফজলুল করিম সাঈদীর দোয়াত কলম মার্কার একনিষ্ট সমর্থক ছিলেন বাদীর ছেলে আবদুল জলিল। সমর্থনকারী হিসেবে বিভিন্ন সভা ও প্রচারণার কাজে অংশ গ্রহণ করে। তা ছাড়া তাদের বসত ঘর সংলগ্ন নিজস্ব মালিকানাধীন দোকান ঘরের পার্শ্বে দোয়াত কলম মার্কার একটি অফিসও করেন। তাতে ক্ষিপ্ত ও ক্ষুব্ধ হয়ে নির্বাচনে ঘোড়া মার্কার অপর চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীর উল্লেখিত সমর্থকরা নির্বাচনী প্রতিহিংসার আক্রোশে সাঈদীর দোয়াত কলমের পক্ষে কাজ না করতে এবং অফিস বন্ধ করে দিতে বিভিন্নভাবে হুমকি-ধমকি প্রদান করে। তারই ধারাবাহিকতায় ঘটনারদিন ২১মে দিবাগত রাত ৩ ঘটিকায় অফিস গৃহে ঢুকে ভাংচুর ও নির্বাচনী পোস্টার ছিড়ে আনুমানিক ২০ হাজার টাকার ক্ষতি সাধন করে। এক পর্যায়ে সংঘবদ্ধ হয়ে দোয়াত কলমের নির্বাচনী অফিস গৃহ, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বসতবাড়িতে পায়খানা নিক্ষেপ করে ব্যবহার অনুপযোগী করে ফেলে। পাড়ার লোকজন চতুর্দিক থেকে এগিয়ে আসলে তারা পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে ২১মে চকরিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দোয়াত কলম মার্কা বিপুল ভোটে জয়লাভ করায় এলাকার শত শত লোকজন নিয়ে বিজয় মিছিলে অংশ গ্রহণ করায় আসামীরা আরো ক্ষিপ্ত হয়ে নির্বাচনী প্রতিহিংসার আক্রোশে এদিন রাত আনুমানিক ১১ ঘটিকার সময় হাতে বন্দুক, ধারালো দা, কিরিচ,লোহার রড, লোহার হাতুড়ী, লাঠিসহ মারাত্মক অবৈধ অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে পরিকল্পিতভাবে ঘটনাস্থলের মুদির দোকানে ঢুকে দোয়াত কলমের সমর্থক আবদু জলিলকে মারধরে জখম করে। তাকে উদ্ধারে তার স্ত্রী ইছমত আরা বেগম এগিয়ে গেলে তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গলা চেপে ধরে শ্বাসরোধ করে লাথি মেরে মাটিতে ফেলে দেয়। এক পযায়ে তাকে সর্বশরীরে এলোপাতাড়ীভাবে আঘাত করে ও চুলে ধরে টানা-হেঁছড়া করতঃ বিবস্ত্র করিয়া শ্লীলতাহানী করে। তাদের বাঁচাতে ভাইয়ের স্ত্রী নাছিমা জন্নাত এগিয়ে গেলে তাকেও চুলে ধরে টানা-হেঁছড়া করতঃ বিবস্ত্র করে শ্লীলতাহানী করে। এসময় তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ক্যাশ ড্রয়ারে থাকা নগদ ৫৬,৮০০টাকা ও ২ভরি ৮ আনা ওজনের স্বর্ণালংকার, ৪০ হাজার টাকা মূল্যের বিভিন্ন কোম্পানীর সিগারেট, তৈল এর প্যাকেট ও মুদির মালামাল লুট ও এলোপাতাড়ী ছিটিয়ে প্রায় ২০ হাজার টাকার মালামালের ক্ষতি সাধন করে। তারা প্রশাসনের কাছে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনী সহায়তা কামনা করেছেন।
চকরিয়া থানার অফিসার ইরচার্জ (ওসি) শেখ মোহাম্মদ আলী জানান, অফিসে ও বাড়িতে মল নিক্ষেপ ও হামলার ঘটনায় অভিযোগ পাওয়ার সাথে সাথে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নিতে থানার একজন উপপরিদর্শককে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।##