বান্দরবানে কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেনএনএফ) ফের তাণ্ডব চালাচ্ছে থানচি বাজারে, চলছে মুহুর্মুহু গোলাগুলি।
বৃহস্পতিবার (০৪ এপ্রিল) রাত নয়টার দিকে এই গোলাগুলির খবর পাওয়া যায়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসা মোহাম্মদ মামুন। তিনি বলেন, বর্তমানে থানচি উপজেলার থানচি বাজারের থানার পাশে এবং হাসপাতালের পেছনে গোলাগুলি চলছে। কিছুক্ষণ পর থেমে থেমে গোলাগুলি চলছেই।
ইউএনও মোহাম্মদ মামুন আরো বলেন, ধারনা করা হচ্ছে যারা গত কাল এসেছিল তারাই গোলাগুলি করছে। তবে কাদের সাথে কাদের গোলাগুলি চলছে সে বিষয়ে বিস্তারিত জানা যায়নি
এদিকে বান্দরবানের রুমা শাখার সোনালী ব্যাংকের অপহৃত ম্যানেজার নেজাম উদ্দীনকে উদ্ধারের কথা জানিয়েছে র্যাব।
আজ বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) সন্ধ্যার পর র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, র্যাবের মধ্যস্থতায় তাকে উদ্ধার করা হয়েছে। এ বিষয়ে বিস্তারিত পরে জানানো হবে।
অন্যদিকে রুমা ও থানচি উপজেলায় ব্যাংক লুট ও অপহরণের পর কুকিচিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট কেএনএফ’র সাথে সব ধরনের সংলাপ ও যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছে শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটি। সেই সাথে এ ঘটনার জন্য নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে কমিটির সদস্যরা।
বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) সকালে বান্দরবান জেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে কমিটির সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। বৈঠকে শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সম্মেলনে তিনি দীর্ঘদিন ধরে কেএনএফ ও শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির সঙ্গে আলোচনা এবং তাদের সঙ্গে শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির বর্তমান অবস্থা তুলে ধরেন।
এ সময় সাংবাদিকদের সামনে তিনি লিখিত একটি বিবৃতি প্রদান করেন। বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘গত ২ এপ্রিল রুমা উপজেলায় কেএনএফ কর্তৃক পবিত্র রমজান মাসে তারাবি নামাজীদের ওপর হামলা, সরকারি কর্মকর্তা ও পথচারীদের জিম্মি, অর্থ লুটের উদ্দেশ্যে সোনালী ব্যাংকে হামলা, ব্যাংক ম্যানেজারকে অপহরণ, পুলিশ ও আনসার বাহিনীর ১৪টি অস্ত্র লুট করে নেওয়া। ৩ এপ্রিল থানচি উপজেলায় স্থানীয়দের জিম্মি করে এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ ও দুটি ব্যাংক লুট করার মতো হীন কার্যক্রমের বিরুদ্ধে শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির পক্ষ থেকে তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।’
এদিকে বান্দরবান সদর শাখা, আলীকদম, লামা ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ব্যাংকের সকল কার্যক্রম চালু থাকলেও নিরাপত্তাজনিত কারণে থানচি, রুমা, রোয়াংছড়ি উপজেলায় সব ধরনের ব্যাংক কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এটা অব্যাহত থাকবে।
বুধবার (৪ এপ্রিল) সকাল ১১টার দিকে সোনালী ব্যাংকের এজিএম ওসমান গনি এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার রাত নয়টায় রুমা উপজেলার সোনালী ব্যাংক লুট করার চেস্টা করে এবং পরে লুট করতে না পেরে ব্যাংক ম্যানেজার নিজাম উদ্দিনকে অপহরণ করে নিয়ে যায় কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ)। পরে বুধবার বিকেল ৩টার দিকে এই শাখার ভোল্ট থেকে কক্সবাজার থেকে সিআইডি এসে অক্ষত অবস্থায় ১ কোটি ৫৯ লক্ষ ৪৬ হাজার টাকা বের করে।এই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই বুধবার দুপুর সোয়া ১২ টার দিকে আবার থানচি উপজেলায় অবস্থিত সোনালী ও কৃষি ব্যাংকে প্রবেশ করে কেএনএফ। এ সময় তারা (কেএনএফ) দুই ব্যাংকের ক্যাশ থেকে মোট ১৭ লক্ষ ৪৫ হাজার টাকা লুট করে পালিয়ে যায়।