বান্দরবানের লামায় বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৩টায় আঘাত হানে কালবৈশাখী ঝড়। ঘন্টাব্যাপী আঘাত হানা ঝড়ে কমপক্ষে সহস্রাধিক বাড়িঘর লন্ডভন্ড হয়েছে। রাস্তার পাশে গাছ ভেঙ্গে বৈদ্যুতিক তাঁরের উপর পড়ে ৩০টি উপর বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙ্গে ও অসংখ্য স্থানে তাঁর ছিঁড়ে পড়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।
উপজেলার অর্ধশত স্থানে রাস্তায় গাছ ভেঙ্গে পড়ে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে পড়ে। স্থানীয় লোকজন, বিদ্যুৎ অফিস ও সড়ক-জনপদ বিভাগ কয়েক ঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা স্বাভাবিক করলেও বিদ্যুৎ সচল হতে আরো দুই-একদিন লাগতে পারে বলে জানিয়েছে পিডিবি লামার আবাসিক প্রকৌশলী সাজ্জাদ হোসেন।
জানা যায়, ঝড়ে লামা উপজেলার ১টি পৌরসভা ৭টি ইউনিয়নে সব এলাকায় কমবেশি বিধ্বস্ত হয়েছে। তাছাড়া উপজেলার সবকয়টি ইউনিয়নে ছোটবড় বহু ঘর আংশিক ভেঙ্গে গেছে। এছাড়া রূপসীপাড়া ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড বৈদ্যভিটা এলাকায় বজ্রপাতে এক কৃষকের ৫টি ছাগল এবং পূর্ব শিলেরতুয়া এলাকায় রমজান আলী মেম্বারের খামারে ঘর চাপা পড়ে এটি ছাগল মারা গেছে।
রূপসীপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান ছাচিং প্রু মার্মা বলেন, গতরাতের কালবৈশাখী ঝড়ে আমার ইউনিয়নের দুই শতাধিক ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং বৈদ্যভিটা ও পূর্ব শিলেরতুয়া এলাকায় ৬টি ছাগল মারা গেছে। অসংখ্য পড়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। সকাল থেকে স্থানীয় লোকজন নিয়ে গাছ কেটে যোগাযোগ স্বাভাবিক করি। কমবেশি সব মানুষের ক্ষতি হয়েছে। যাদের বসতবাড়ি সম্পূর্ণ ভেঙ্গে গেছে তাদের ইউনিয়ন পরিষদ হতে সহায়তা করা হবে।
লামা পৌরসভার হরিণঝিরি এলাকায় মোঃ হাবিব বলেন, আমাদের ৯নং ওয়ার্ডের কালবৈশাখী ঝড়ে অনেকের বসতবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। এতে কয়েকটি পরিবার খোলা আকাশের নিচে দিনাতিপাত করছেন। এ ব্যাপারে প্রশাসনের সুদৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
লামা সদর ইউপি চেয়ারম্যান মিন্টু কুমার সেন বলেন, আমার ইউনিয়নে হঠাৎ কালবৈশাখী ঝড়ে আঘাতে দেড়-শতাধিক বাড়িঘর ভেঙ্গে যায়। যেখানে ২৫টি বাড়িঘর সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়ে যায় বলে তিনি দাবি করেন। এমনকি বেশকিছু দোকান-ঘরও ভেঙে যায়। গজালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান বাথোয়াইচিং মার্মা জানান, তার ইউনিয়নে ছোটবড় শতাধিক ঘর আংশিক ভেঙে গেছে। এদিকে তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানরা স্ব-স্ব ইউনিয়নের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ মনিরুল ইসলাম বলেন, আমরা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর তালিকা প্রস্তুত করছি। তালিকা লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সুপারিশ নিয়ে বান্দরবান জেলা প্রশাসকের কাছে পাঠানো হবে। বরাদ্দ পেলে ক্ষতি বিবেচনা করে ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে। বেশি ক্ষতিগ্রস্তদের শুকনো খাবার দেয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে লামা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, কালবৈশাখী বাতাসের প্রবল ঘূর্ণিপাকের কারণে সব কয়টি ইউনিয়নে অনেক কয়েকটি বসতবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। কয়েকটি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। ইউপি চেয়ারম্যানরা ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা দিলে সরকারী অনুদানের ব্যবস্থা করা হবে।