বৃহস্পতিবার- ২১শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

dainiknilgiri.com

এবার কোটি টাকা ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ

এবার কোটি টাকা ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ

এইতো ছয় মাস আগে ৬০ লক্ষ টাকা ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগে বান্দরবানের আলীকদম উপজেলায় ‘আলীকদমে বেতন ছাড়ের নামে অর্থ আদায়’ শিরোনামে শিক্ষক সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে দৈনিক যুগান্তরে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল। পরে বান্দরবানের প্রাথমিক শিক্ষা অফিস নড়েচড়ে বসে এবং তদন্তের নির্দেশ দেয়। বান্দরবান জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস এই তদন্তের সত্যতাও পায় বটে কিন্তু বান্দরবান জেলা পরিষদে তাদের শাস্তিমুলক বদলির সুপারিশ করলেও কোন এক অদৃশ্য কারনে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি এই শিক্ষক সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে।

জেলা পরিষদ থেকে কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় এবার আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে সেই শিক্ষক সিন্ডিকেট। আগে ৬০ লক্ষ টাকার ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ থাকলেও এখন অভিযোগ উঠেছে ১ কোটি ১২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার। প্রতিজন শিক্ষক থেকে দেড় লক্ষ টাকা করে মোট ৭৫ জন শিক্ষক থেকে ১ কোটি ১২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে এই শিক্ষক সিন্ডিকেট।

প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালে বান্দরবানে ৮০টি ইউএনডিপির প্রাথমিক বিদ্যালয় সরকারিকরণ করা হয় এবং ২০২২ সালে এসে এই বিদ্যালয়গুলোর শিক্ষকদেরও চূড়ান্তভাবে গেজেটের মাধ্যমে সরকারিকরণ করে নেওয়া হয়। সেই সুবাদে এই বিদ্যালয়গুলোতে শুরু থেকে যারা চাকরি করেছিল তারা সবাই বিগত বছরগুলোর বকেয়া বেতন পাবে জনপ্রতি প্রায় ১৪ লাখ টাকা। আর এই বকেয়া বেতনগুলো ছাড়াতে গিয়ে বান্দরবানের আলীকদম উপজেলায় শুরু হয় ৭৫ জন শিক্ষককে নিয়ে যত বাণিজ্য ও সিন্ডিকেট খেলা।

নাম প্রকাশ না করা শর্তে বেশ কয়েকজন ভুক্তভোগী শিক্ষক বলেন, আমাদেরকে এক প্রকার জিম্মি করেই মুলত এই টাকাগুলো নেওয়া হচ্ছে। টাকা নাদিলে আমাদেরকে চাকরিও ঠিক মত করতে দিবে না। শিক্ষা অফিসার দিয়ে বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করা হবে। তাই বকেয়া বেতন পাওয়ার সাথে সাথে সিন্ডিকেট শিক্ষকদের কাছে টাকা দিয়ে দিয়েছি।

অন্য আরেক ভুক্তভোগী শিক্ষকের সাথে যোগাযোগ করা হলে বলেন, টাকা না দিলে ওরা (শিক্ষক সিন্ডিকেট) চাকরি খেয়ে দেওয়ার ভয় দেখাচ্ছে তাই দিয়ে দিয়েছি।

আরেক ভুক্তভোগী শিক্ষক জানান, আমরা ১৭ জন শিক্ষক বাদে সবাই দেড় লক্ষ টাকা করে দিয়ে দিয়েছে। আমরা প্রতিবাদ করছি বলে আমাদেরকে শিক্ষা অফিসার দিয়ে হুমকী দেওয়া হচ্ছে। হুমকীর ব্যাপারে যদিও বা উপজেলা শিক্ষা অফিসার অস্বীকার করেছেন।

এ সিন্ডিকেটের নেতৃত্বে রয়েছেন চম্পট পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জিয়াউল হক, সহকারি শিক্ষক মাইকেল মার্মা, থোয়াইক্যনু মার্মা, মংচাথুই মার্মা, রাজিব ম্রো ও নিক্সন পাল। বিষয়টি নিয়ে প্রধান শিক্ষক জিয়াউল হক, থোয়াইক্যনু মার্মা এবং মংচাথুই মার্মার সাথে ফোনে যোগাযোগ করার চেস্টা করলে তারা ফোন রিসিভ করেনি। রাজিব ম্রো ও নিক্সন পালের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।

এ ব্যাপারে আলীকদম উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোশারফ হোসেন বলেন, ‘আমি গত মাসে জয়েন্ট করেছি মাত্র আলীকদমে। তাই এব্যাপারে কিছু জানিনা।’

বান্দরবান জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ আব্দুল মান্নান বলেন, বিষয়টি আমার নলেজে নাই এবং আমার শিক্ষা অফিস জড়িত না। তবে যদি কোন ভুক্তভোগি শিক্ষক লিখিত অভিযোগ দিলে আমি ব্যবস্থা নিবো।

0Shares

আরও পড়ুন

সম্পর্কিত আরো খবর

জনপ্রিয়